আমিন ইবনে আব্বাস
ছুবহানাল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা (সুঃ) হচ্ছেন সকল জ্ঞানের উৎস এবং আধার। তিনিই এমন একজন জ্ঞান বিতরণকারী যাকে কোথাও থেকে জ্ঞান নিতে হয় না এবং তা এ জন্য যে, তাঁর কোন কিছুই অপূর্ণ নয়, নয় কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী বরং তিনি সকল কিছুতে, সব ব্যাপারে স্বয়ংসম্পর্ণ। মূলত তিনিই হচ্ছেন মহাবিশ্বে একমাত্র জ্ঞান বিতরনকারী-যা পেয়ে কিছু বিশেষ শ্রেনীর মানুষ অন্য সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। মানুষের যে জ্ঞান তা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে তাঁরই অনুগ্রহে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া। হে আল্লাহ সুবঃ তোমার কাছ থেকে পাওয়া জ্ঞান থেকে যা কিছু এ লেখনীতে তুলে ধরা হোল,তা তখনই কাজে লাগবে যখন তুমি সে কাজে লাগাটাকে অনুমোদন করবে। তুমি এ প্রচেষ্টাকে কবুল কর।
পৃথিবী নামক এ উপগ্রহটিতে মানুষের জীবনের শুরু নয়। এটি আমাদের সফলতা কিংবা ব্যর্থতা সফরের দ্বিতীয় মঞ্জিল। যে ‘ঐশী ডাইমেনশন’ থেকে মানুষ সফর শুরু করেছে, তার মধ্যে পৃথিবীর জীবনটা আমাদের জন্য সব থেকে বেশী গুরুত্ব পাবার দাবী রাখে। দুনিয়ার জীবনটা সব থেকে বেশী গুরুত্বের দাবীদার এ জন্য যে, এখানকার ভূমিকাই নির্ধারণ করবে মানুষের পরের মঞ্জিল অর্থাৎ আমাদের কবরের জীবন কেমন হবে? এ কবরের জীবনই তার এ দীর্ঘ সফরের শেষ মঞ্জিলের সম্ভাব্যতার (জাহান্নাম বা জান্নাত প্রাপ্তির) ইঙ্গিতবহ। মানুষের এই দীর্ঘ সফরের প্রথম মঞ্জিল অর্থাৎ পৃথিবীর এ জীবনই নির্ধারণ করবে তার পরবর্তী সব মঞ্জিলগুলো আরামের নাকি কষ্টের হবে, তার শেষ মঞ্জিল বা গন্তব্য সফল হবে নাকি ব্যর্থ হবে। ব্যর্থ হলে শেষ মঞ্জিলে তার স্থান হবে জাহান্নাম আর সফল হলে তার স্থান হবে মৃত্যুহীন চিরস্থায়ী জান্নাত। তাই প্রতিটি মানুষের জীবনের প্রধান ধর্তব্য-বিবেচ্য হচ্ছে জান্নাত-জাহান্নাম শব্দ দু’টি। এ শব্দদ্বয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে হবে দুনিয়াতে তার জীবন নির্বাহ, সামগ্রিক চিন্তাধারা ও কর্মকান্ড। দুনিয়ার জীবন নির্বাহ করতে গিয়ে যে সামগ্রিক চিন্তাধারা ও কর্মকান্ড তাকেই কুরআন-সুন্নতে আল্লাহ সুবঃ বলেছেন দ্বীন ইসলাম বা ইসলামী জীবন বিধান। ইসলামী জীবন বিধানের যে মৌলিক ডিজাইন তাতে মানব জীবনকে অন্য মানুষের সাথে সম্পৃক্ত করে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যক্তি একা একা চলবে তার ব্যবস্থা আল্লাহ সুবঃ কর্তৃক মানব ডিজাইনে রাখা হয়নি, যা কুরআন-সুন্নাহর বিবরণে অতি সহজেই অনুমেয়। এই যে বিশেষ ডিজাইন হাদিসে তার বর্ণনা হচ্ছে “সকল মুসলিম ভাই ভাই (বোন বোন)” (বুখারী)। অর্থাৎ মুুসলিমরা একে অপরের দেখাশোনা, রক্ষনাবেক্ষন তথা ‘কেয়ার টেকিং’ করবে। একইভাবে অমুসলিমদের বেলাতেও আমাদের এ দায়িত্ব পালন করতে হবে কেননা দুনিয়ার সকল মানুষ আমরা সবাই আমাদের আদি পিতা-মাতা আদম ও হাওয়া (আ) থেকে এসেছি। সে অর্থে সামগ্রিক বিবেচনায় একে অপরের আত্মীয় বিধায় তাদের ‘কেয়ার টেকিং’ করাকেও আমরা গুরুত্ব দিতে বাধ্য। এই কেয়ার টেকিংয়ের অন্যতম বড় কাজটার দায়িত্বের কথাই এ লেখায় তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
